নামাজ না পড়ে শুধু রোজা রাখলে কি রোজা হয় ?
অনেকেই নামাজ আদায় করে না। কিন্তু রমজান মাস আসলে ঠিকই রোজা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হলো যারা নামাজ না পড়ে শুধু রোজা পালন করে, তাদের রোজা কবুল হবে কিন।
চলুন বুখারী শরীফ এবং মুসলীম শরীফের আলোকে জেনে নিই।
বুরাইদা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন:
( ﻣَﻦْ ﺗَﺮَﻙَ ﺻَﻼﺓَ ﺍﻟْﻌَﺼْﺮِ ﻓَﻘَﺪْ ﺣَﺒِﻂَ ﻋَﻤَﻠُﻪُ )
“যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ত্যাগ করে তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়। ” [ বুখারী – ৫২০ ]
“তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়” এর অর্থ হল: তা বাতিল হয়ে যায় এবং তা তার কোনো কাজে আসবে না। এ হাদিস প্রমাণ করে যে, বেনামাজির কোনো আমল আল্লাহ কবুল করেন না এবং বেনামাজি তার আমল দ্বারা কোন ভাবে উপকৃত হবে না। তার কোনো আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন করা হবে না।
ইবনুল কায়্যিম তাঁর ‘আস-স্বালাত’ নামক গ্রন্থের ৬৫ পৃষ্ঠায় এ হাদিসের মর্মার্থ আলোচনা করতে গিয়ে বলেন–
বেনামাজি ব্যক্তি দুই ধরণের-
(১) পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করা। কোন নামাজই না-পড়া। এ ব্যক্তির সমস্ত আমল বিফলে যাবে।
(২) বিশেষ কোন দিন বিশেষ কোন নামাজ ত্যাগ করা। এক্ষেত্রে তার বিশেষ দিনের আমল বিফলে যাবে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে সালাত ত্যাগ করলে তার সার্বিক আমল বিফলে যাবে। আর বিশেষ নামাজ ত্যাগ করলে বিশেষ আমল বিফলে যাবে। ” ।
“ফাতাওয়াস সিয়াম” (পৃ-৮৭) গ্রন্থে এসেছে শাইখ ইবনে উছাইমীনকে বেনামাযীর রোজা রাখার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো তিনি উত্তরে বলেন:
“বেনামাযীর রোজা শুদ্ধ নয় এবং তা কবুলযোগ্য নয়। কারণ নামায ত্যাগকারী কাফের, মুরতাদ। ”
এর সপক্ষে দলিল হচ্ছে-
আল্লাহ্ তাআলার বাণী:
[ ﻓَﺈِﻥْ ﺗَﺎﺑُﻮﺍ ﻭَﺃَﻗَﺎﻣُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻭَﺁﺗَﻮُﺍ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻓَﺈِﺧْﻮَﺍﻧُﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ ][ ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ : 11 ]
“আর যদি তারা তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই। ” [ সূরা তওবা: ১১]
নবী ﷺ এর বাণী:
( ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺸِّﺮْﻙِ ﻭَﺍﻟْﻜُﻔْﺮِ ﺗَﺮْﻙُ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ ) ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ ( 82 )
“কোন ব্যক্তির মাঝে এবং শির্ক ও কুফরের মাঝে সংযোগ হচ্ছে সালাত বর্জন। ”[ সহিহ মুসলিম ৮২]
এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বাণী –
( ﺍﻟْﻌَﻬْﺪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﺍﻟﺼَّﻼﺓُ ﻓَﻤَﻦْ ﺗَﺮَﻛَﻬَﺎ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﻔَﺮَ ) ( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ( 2621 ) . ﺻﺤﺤﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ )
“আমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি হলো নামাযের। সুতরাং যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করল, সে কুফরি করল। ” [
জামে তিরমিযী (২৬২১), আলবানী ‘সহীহ আত-তিরমিযী’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলে চিহ্নিত করেছেন]
এই মতের পক্ষে সাহাবায়ে কেরামের ‘ইজমা’ সংঘটিত না হলেও সর্বস্তরের সাহাবীগণ এই অভিমত পোষণ করতেন।
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী আব্দুল্লাহ ইবনে শাক্বিক রাহিমাহুমুল্লাহ বলেছেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবীগণ নামায ছাড়া অন্য কোন আমল ত্যাগ করাকে কুফরি মনে করতেন না। ”
পূর্বোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যদি কোন ব্যক্তি রোজা রাখে; কিন্তু নামায না পড়ে তবে তার রোজা প্রত্যাখ্যাত, গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা কেয়ামতের দিন আল্লাহ্র কাছে কোন উপকারে আসবে না। আমরা এমন ব্যক্তিকে বলবো: আগে নামায ধরুন, তারপর রোজা রাখুন। আপনি যদি নামায না পড়েন, কিন্তু রোজা রাখেন তবে আপনার রোজা প্রত্যাখ্যাত হবে; কারণ কাফেরের কোন ইবাদত কবুল হয় না। ”
চলুন বুখারী শরীফ এবং মুসলীম শরীফের আলোকে জেনে নিই।
বুরাইদা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন:
( ﻣَﻦْ ﺗَﺮَﻙَ ﺻَﻼﺓَ ﺍﻟْﻌَﺼْﺮِ ﻓَﻘَﺪْ ﺣَﺒِﻂَ ﻋَﻤَﻠُﻪُ )
“যে ব্যক্তি আসরের নামাজ ত্যাগ করে তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়। ” [ বুখারী – ৫২০ ]
“তার আমল নিষ্ফল হয়ে যায়” এর অর্থ হল: তা বাতিল হয়ে যায় এবং তা তার কোনো কাজে আসবে না। এ হাদিস প্রমাণ করে যে, বেনামাজির কোনো আমল আল্লাহ কবুল করেন না এবং বেনামাজি তার আমল দ্বারা কোন ভাবে উপকৃত হবে না। তার কোনো আমল আল্লাহর কাছে উত্তোলন করা হবে না।
ইবনুল কায়্যিম তাঁর ‘আস-স্বালাত’ নামক গ্রন্থের ৬৫ পৃষ্ঠায় এ হাদিসের মর্মার্থ আলোচনা করতে গিয়ে বলেন–
বেনামাজি ব্যক্তি দুই ধরণের-
(১) পুরোপুরিভাবে ত্যাগ করা। কোন নামাজই না-পড়া। এ ব্যক্তির সমস্ত আমল বিফলে যাবে।
(২) বিশেষ কোন দিন বিশেষ কোন নামাজ ত্যাগ করা। এক্ষেত্রে তার বিশেষ দিনের আমল বিফলে যাবে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে সালাত ত্যাগ করলে তার সার্বিক আমল বিফলে যাবে। আর বিশেষ নামাজ ত্যাগ করলে বিশেষ আমল বিফলে যাবে। ” ।
“ফাতাওয়াস সিয়াম” (পৃ-৮৭) গ্রন্থে এসেছে শাইখ ইবনে উছাইমীনকে বেনামাযীর রোজা রাখার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো তিনি উত্তরে বলেন:
“বেনামাযীর রোজা শুদ্ধ নয় এবং তা কবুলযোগ্য নয়। কারণ নামায ত্যাগকারী কাফের, মুরতাদ। ”
এর সপক্ষে দলিল হচ্ছে-
আল্লাহ্ তাআলার বাণী:
[ ﻓَﺈِﻥْ ﺗَﺎﺑُﻮﺍ ﻭَﺃَﻗَﺎﻣُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﻼﺓَ ﻭَﺁﺗَﻮُﺍ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻓَﺈِﺧْﻮَﺍﻧُﻜُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ ][ ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ : 11 ]
“আর যদি তারা তওবা করে, সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় তবে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই। ” [ সূরা তওবা: ১১]
নবী ﷺ এর বাণী:
( ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺸِّﺮْﻙِ ﻭَﺍﻟْﻜُﻔْﺮِ ﺗَﺮْﻙُ ﺍﻟﺼَّﻼﺓِ ) ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ ( 82 )
“কোন ব্যক্তির মাঝে এবং শির্ক ও কুফরের মাঝে সংযোগ হচ্ছে সালাত বর্জন। ”[ সহিহ মুসলিম ৮২]
এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বাণী –
( ﺍﻟْﻌَﻬْﺪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﺍﻟﺼَّﻼﺓُ ﻓَﻤَﻦْ ﺗَﺮَﻛَﻬَﺎ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﻔَﺮَ ) ( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ( 2621 ) . ﺻﺤﺤﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ )
“আমাদের ও তাদের মধ্যে চুক্তি হলো নামাযের। সুতরাং যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করল, সে কুফরি করল। ” [
জামে তিরমিযী (২৬২১), আলবানী ‘সহীহ আত-তিরমিযী’ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলে চিহ্নিত করেছেন]
এই মতের পক্ষে সাহাবায়ে কেরামের ‘ইজমা’ সংঘটিত না হলেও সর্বস্তরের সাহাবীগণ এই অভিমত পোষণ করতেন।
প্রসিদ্ধ তাবেয়ী আব্দুল্লাহ ইবনে শাক্বিক রাহিমাহুমুল্লাহ বলেছেন: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবীগণ নামায ছাড়া অন্য কোন আমল ত্যাগ করাকে কুফরি মনে করতেন না। ”
পূর্বোক্ত আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, যদি কোন ব্যক্তি রোজা রাখে; কিন্তু নামায না পড়ে তবে তার রোজা প্রত্যাখ্যাত, গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা কেয়ামতের দিন আল্লাহ্র কাছে কোন উপকারে আসবে না। আমরা এমন ব্যক্তিকে বলবো: আগে নামায ধরুন, তারপর রোজা রাখুন। আপনি যদি নামায না পড়েন, কিন্তু রোজা রাখেন তবে আপনার রোজা প্রত্যাখ্যাত হবে; কারণ কাফেরের কোন ইবাদত কবুল হয় না। ”